হটাৎ দারোয়ান চিৎকার করে উঠল "কর্তা বাবু, কর্তা বাবু ও গিন্নি মা, তাড়াতাড়ি বাইরে আসুন"।
সঙ্গে সঙ্গে বাড়ির কর্তা হরিচরন বাবু ও তার স্ত্রী সরমা দেবী সদর দরজায় এসে দাড়ালেন।
হরিচরন বাবু প্রায় রেগেই দারোয়ান কে বললেন "ওই মদন লাল কি হয়েছে, এত চিৎকার
করছিস কেনো? বাড়িতে ডাকাত পড়েছে নাকি?"
"আজ্ঞে কর্তা গুরু দেব এসেছেন"।
কথাটা শুনা মাত্রই হরিচরন বাবু তাড়াতাড়ি বাইরে এলেন। বাইরে এসে দেখতে পেলেন তা্র গুরুদেব রজত-স্বামী উঠানে দাড়িয়ে আছেন। আর গুরুদেবের শিষ্য-নেপা তার মাথায় ছাতা ধরে আছে। বৈশাখ মাসের প্রচন্ড গরম ও রৌদ্রে তারা ঘেমে-নেয়ে একসার হয়ে গিয়েছেন। গুরুদেবের শ্বেত বস্ত্র ঘামে ভিজে জবজব করছে। হরিচরন বাবু তাড়াতাড়ি গুরুদেবের পা ছুয়ে প্রনাম করলেন। তারপর হাসি মুখে গুরুদেবকে জিজ্ঞাসা করলেন "গুরুদেব আপনি কেমন আছেন?, পথে আসতে কোনো অসুবিধা হয়নি তো"।
গুরুদেব এমনিতে অনেকক্ষন বাইরে দাড় করিয়ে রাখার জন্য রেগে ছিলেন। এইবার হরিচরন বাবুর কথা শুনে আরো রেগে গেলেন। তিনি কর্কশ ভাষায় বললেন,"গুরুদেবকে বুঝি উঠান থেকেই বিদায় করবি?”
সত্যি তোর ভক্তি দেখে আমি স্তম্ভিত না হয়ে পারছি না। হরিচরন বাবু বলেন "না না গুরুদেব অমন কথা বলবেন না। আমার যদি কনো ভুল হয় ক্ষমা করে দেবেন। আসুন আসনি ভিতরে আসুন। কইগো গিন্নি গুরু দেবের পা ধোয়ার জল নিয়ে আসো"।
সরমাদেবী ঝিকে সঙ্গে নিয়ে গুরু দেবের পা ধোয়ার জল, কাঁসার থালা, গামছা নিয়ে আসলেন। কাঁসার থালাটা নিচে রেখে দিলেন। গুরুদেব সেই থালার উপর পা রেখে দাড়ালেন। সরমা দেবী ঝিয়ের হাত থেকে জলের গারুটা নিয়ে, গুরু দেবের পা ধুয়িয়ে দিলেন। তারপর হরিচরন বাবু পা ধোয়ালেন, আর গামছা দিয়ে গুরু দেবের পা মুছিয়ে দিলেন। এরপর বাড়ির ছোটোরা একে একে গুরুদেবকে প্রনাম করতে লাগলো। সবার যখন প্রনাম করা শেষ, তখন সরমা দেবি তার ছোটো ছেলে সিধুকে বললেন, "ওই সিধু ওপরে দাড়িয়ে আছিস কেনো? নিচে এসে গুরুদেবেকে প্রনাম করে আশীর্বাদ নে "।
Comments & Reviews (0)
No comments yet :(