Documentary

শিক্ষার সেকাল --- একাল

3 years ago

0

ভারতবর্ষ তখন পরাধীন। দিকে দিকে উপনিবেশিকতাবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে। উপনিবেশ স্হাপন করা ছিল তখনকার এক দেশজয়ের রীতি। জল পথই ছিল প্রধান। কত উপজাতি এই ভারতবর্ষে এসেছিল। পর্তুগীজ,ওলন্দাজ ইত্যাদি উপজাতি এদেশে এসেছিল কিন্তু কিছুদিন থাকার পর তারা বিদায় নিল। অবশেষে ফরাসী কুঠি স্হাপন হল চন্দননগরে। তারা ছাপাখানা স্হাপন করল,সাহেবী শিক্ষার সাথে সাথে এদেশে শিক্ষার আলোচনা হতে শুরু করল। ইংরেজী বা ল্যটিন বিভিন্ন ভাষায় গ্রন্থ ছাপা হতে লাগল। পাদ্রী জেমস্ লঙ সাহেবের প্রচেষ্টায় প্রাচ্য দেশেও যাতে শিক্ষার বিস্তার হয় তার চেষ্টা চলল। কোট -- কাছারি সমস্ত কিছুতে বিভিন্ন পুস্তক এই ছাপা খানায় মুদ্রণ হতে লাগল। মুদ্রণ যন্রের প্রচলন এদেশে শুরু হল।

ইংরেজরা সুতানুটীতে ঘাঁটি গেড়ে বসল । সেকেলের কলকাতা জমিদারদের পৃষ্ঠপােষকতায় বিভিন্ন জমিদারী সেরেস্তায় কিছু কিছু হিসেব নিকেশের প্রয়ােজনে শিক্ষাচর্চা হতাে । খরর খরর করে ঘােড়ার গাড়ী চলত । জমিদার বাবুরা আমুদে ছিলেন । আয়াসী উচ্ছৃঙ্খল জীবন যাপনে ব্যস্ত থাকতেন । নাচমহল , উত্তম , ওস্তাদী তালিম চলত তখনকার দিনে প্রায় জমিদাররা উচ্ছৃঙ্খল ছিলেন । আবার কোন কোন রাজা বা জমিদারের পৃষ্ঠপােষকতায় বহু কবি , সাহিত্যিক সাহিত্যচর্চার সুযােগ পেতেন । স্বীয় প্রতিভাবলে তারা মা সারদার আরাধনা করতেন । তারা সৃষ্টি করতেন । কিছু 'কড়চা ,তা তাদের নিজেদের প্রতিভা প্রসূত ।

জমিদারী সেরেস্তায় বিভিন্ন হিসেব নিকেশের ফাঁকে ফাঁকে হাস্য কৌতুকের ছলে কিছু রসিক মানুষ নানারকম ছন্দ-ছাড়া তৈরী করে বলতেন। খাদ্যরসিক যারা,তারা কিছু ছড়া রচনা করতেন -


"হরিদাসের বুলবুল ভাজা
টাট্কা তাজা
খেতে মজা"



রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সভায় থাকতেন গােপাল ভাঁড় । অর্থাৎ তিনি বিদূষক । সভায় নানারকম হাস্যরস পরিবেশন করতেন । রাজা বা জমিদারের পৃষ্ঠপােষকতায় এসব মানুষ রাজসভায় স্থান পেয়েছিলেন । নিজেদের প্রতিভাবলে তারা রাজাকে এবং তখনকার সমাজকে কিছু শিক্ষা দিতেন । শিক্ষার বিস্তারের জন্য দেশের রাজাদের মধ্যে রাজা রামমােহন রায় শিক্ষা প্রসারের জন্য চেষ্টা করেন । ইংরেজ আমলে প্রিভি কাউন্সিলে তিনি ভারতীয়দের শিক্ষা প্রসার করার জন্য চেষ্টা করেন। রাজা ও জমিদারের সঙ্গে ছিল তখনকার ইংরেজ সাহেবদের আনাগোনা ।

কিন্তু ভারতীয়দের শিক্ষা দীক্ষার কথা তখনকার ইংরেজদের মধ্যে ছিল না । পাদ্রী জেমস্ লঙ সাহেব ভারতীয়দের শিক্ষারকথা ভাবেন । কেরী সাহেব ভারতীয়দের বন্ধুর মতো ছিলেন । তাঁদের প্রচেষ্টায় কলকাতায় কিছু বিদ্যালয় স্থাপিত হয় ।

পাশ্চাত্য শিক্ষার আলাে ধীরে ধীরে ভারতে প্রবেশ করে । সাহেবী শিক্ষা ও ভারতীয় শিক্ষা চর্চা শুরু হয়। 'কুশারী ’ বংশ ছিল শ্রেষ্ঠ কলকাতায় । প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর ছিলেন ইংরেজদের খুব প্রিয় পাত্র। এখানে সাহেবদের খুব আলাপ - আলােচনা হতাে শিক্ষা , সাহিত্যের পীঠস্থান ছিল । তখনকার দিনের ঠাকুর পরিবার জমিদার বাড়ী তাই বহু গুণী জ্ঞানী মানুষের সমাবেশ ছিল ঠাকুর করিবারে ।

ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী এদেশ দখল করার পর এদেশের মানুষের শিক্ষা চর্চার কথা ভাবেনি ।

Comments

To comment on content, please Login!

Comments & Reviews (0)

No comments yet :(