দীননাথ রাঁধে নাকো ভাত, ভাবে বসে গালে দিয়ে হাত
চেয়ে রয় নীলাকাশ পানে, আজ তার শুধুই হা ভাত।
পাতুপাল ছিঁড়ে গেছে পাল, পালে তার লাগেনাকো হাওয়া
ডিঙ্গি তার থেমে গেছে চরে, হয়নাকো ডিঙ্গি তার বাওয়া ।
হরিহর ভাঙ্গা ঘরে বসে, চেয়ে রয় উদাস নয়নে
শূন্য হাঁড়ি ফোটে শুধু জলে, ছেলে কেঁদে ঘুমায় অঙ্গনে ।
গুরুদাস হাতে নিয়ে কাস্তে ভাবে, ভাবে শুধু উথাল পাথাল
ঘরেতে পিড়ীতা মেয়ে কাঁদছে, সবকিছু আজ বেসামাল
বুড়ি দাই চোখে ঘুম নাই, কেঁদে চোখে শুকায়েছে জল ।
বুকে তার জমাট পাথর, থালা বাটি শুধু সম্বল
কাটিয়েছে অনেক শরৎ, দেখেনি সে এমন আকাল
মৃত্যুভয়ে ভীত মুখগুলি, জীবন বাঁচাতে সবে নাকাল ।
লোলুপ রসনা মেলি আজ, নবরক্তে তৃষ্ণা মেটাবার
কোন সে ডাকিনী আসিয়াছে, ভয়ে সবে বন্দী আজ ঘরে ।
পথঘাট নিস্তব্ধ নির্জন, পাগলা হাবু আঁকিবুঁকি কাটে
অচেতন যে জন মানুষ,তার ও আজ হাসি গেছে টুটে ।
ভবঘুরে সে ও তো মানুষ, তারও তো কান্না ক্ষুধা পায়
অবশেষে ডাস্টবিনে গিয়ে, বিস্ময়ে বোবা বনে যায় ।
রাস্তার কুকুর বিড়াল, অনাহারে দেহ তার ক্ষীণ
দাঁড়াবার শক্তি হারিয়েছে, বুঝেছে সে অবস্থা সঙ্গীন ।
নির্বোধ শিশুদের দল, গুরু চিন্তা আসে না যাহার
তারাও তো অচঞ্চল আজ, বন্দী গৃহে হাহুতাশ করে ।
ভীত প্রাণে সবে ভাবে আজ, এ সড়ক শেষ হবে কবে
আশায় নেশায় আছে সবে, নিশ্চয়ই এর ইতি হবে ।।
Comments & Reviews (0)
No comments yet :(