সবে ভেঙেছে গাজনের মেলা, পড়ে আছে খুটি।
চারি দিকে ধু ধু মাঠ , জঞ্জালের ঘাটি।
পাশেই চারাল পাড়া এক ক্রোষ দূর, আশেপাশে বাড়ি সব জনবহুল।
তার মাঝে বাড়ি যার, নাম তার ঘিনু চারাল।
খায় তারা ঘুটে বেচে কষ্ট সবার।
ছোটো জাত বলে সবাই, তাদের ঘৃণা করে চলে,
জমিদার করেছে মানা গ্ৰামে না ঢুকিতে।
ঘিনুর ছেলেটির বয়স চার, পাঁচ হবে।
সে এসে বলে আজ পয়লা বৈশাখ, বাবা নতুন জামা দিবে।
ঘিনুর চোখের বারি আর ধরে নাই,
বলে বাপ জামা কেনার টাকা, আমি কোথা পাই।
বসত বাড়ির অবস্থা মোটেও ভালো নয়।
এ দিকে ঘর সারাবো তারো পয়সা নাই।
আসিবে আজিকেই বুঝি কালবৈশাখি ঝড়,
তাই ভেবে আমার বুকে লাগিছে যে ডর।
বলিতে বলিতে মেঘ গগন ছাইলো,
হূড়মূড় করে বাজ পড়িতে লাগিল।
সা সা করিয়া ঝড় আসিল যে ধেয়ে,
প্রথম দমকাতে নিল ঘিনুর চালটি উড়িয়ে।
চারাল সবাইকে নিয়ে ঘিনু ছুটিল,
জমিদার বাড়িতে গিয়ে দয়া সে মাগিলো।
বলে কর্তাবাবু "বাবু দয়া কর দয়াময়"।
আজি বুঝি আমাদের প্রান যে যায়।
জমিদার ধনপতি মানুষ নয় যেন আগুনের গোলা,
বলিল "দুর হ! তোরা ছোটো লোকের পোলা।
ফির যদি আসিস তোরা মোর বাটি,
করে দেব তোদের ভিটে মাটি চাটি"।
তারপর দারোয়ান কে করিল আদেশ,"দূর
করে দে এই সব ছোটোলোক'দের"।
এত গর্ব ভগবান বুঝি সইতে নারিল,
করমর করিয়া জমিদার বাড়িতে বাজ পড়িল।
বর্জ্যঘাতে জমিদারের মাথাই, ছাদ ভেঙ্গে পরে,
কানে তালা লেগে সেই জমিদার মরে।
Comments & Reviews (0)
No comments yet :(