2 years ago
সকালেই একটি হলুদ খামের পার্সেল পেলাম। পার্সেলে প্রেরকের নাম দেখেতো অবাক। পার্সেল এসেছে জাপান হতে। তারও চেয়ে বেশি অবাক হলাম খামের ভিতরে থাকা পার্সেলটি দেখে। এ বছর জুনে জাপানে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া অলিম্পিক গেমসের টিকিট। সাথে জাপানের প্যাগোডা সম্বলিত একটি পোস্টকার্ড। তাতে লেখা, 'না আসলে আপনার দেয়া কিডনী খুলে রেখে দিবো।' আরো বেশি অবাক হলাম। তাকে তো আমি কখনো বলিনি। তার পরিবারেও নিষেধাজ্ঞার শর্ত দেয়া আছে, সে যেন কখনো এ কথা জানতে না পারে। যাহোক, এবার আসল কথায় আসি। দেবী অরোরা কোনো সাধারণ নারী নয়। দেবী আবার সাধারণ নারী হবে কি করে! আসলে সে দেবী নয়, মানবী। অসম্ভব সুন্দরী, মেধাবী ও মানবিক। এরকম নারীর কথা বইয়ে পড়েছি। তার সাথে পরিচয় নাহলে জানাই হতো না, বাস্তবেও এরকম কেউ থাকতে পারে। তার সাথে আমার পরিচয় কাকতালীয়ভাবে ফেসবুকই। আমার রাত জাগা অভ্যেস। বেশিরভাগ রাত ভোর হয়ে যায়। সেও ভোরে নামাজ পড়তে ওঠে। তখন একটু ঢুঁ মারে। আমার কোন লেখা ভালো লাগায় রিকুয়েস্ট পাঠায় এবং আস্তে আস্তে ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমাদের বেশিরভাগ কথা এই ভোর বেলায় হয়। তাই আমি তাকে রোমান ঊষার দেবী অরোরা বলে ডাকি। সেও বলে, আমি আপনাকে টাইথোনাসের মতো অমরত্ব বর দিলাম। আমার ঊষার দেবী হঠাৎ করে নিরুদ্দেশ হয়ে গেলো। আইডি ডিঅ্যাক্টিভ। পরে তার এক বন্ধুর আইডি থেকে জানতে পারলাম, তার দুটি কিডনিই নষ্ট। কেউ একটি কিডনি দান করলে সে বেঁচে যেতো। আমি বুঝতে পারলাম না, আমার কি করা উচিত। ভুল করে একবার বলেছিলাম, তোমার কোনো ধরনের সাহায্য লাগলে বলিও, সামর্থ্য অনুযায়ী সহায়তা করব। সে এত বড় বিপদেও আমাকে বলেনি। বরং এড়িয়ে গেছে। কাকতালীয়ভাবে আমাদের রক্তের গ্রুপও এক। যাদের মনের মিল থাকে, তাদের অন্য কিছুও মনে হয় মিলে যায়। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম, তার মতো সুন্দরী, মেধাবীর বেঁচে থাকাটা খুব জরুরী। তাই ওর বাবার সাথে দেখা করলাম। শর্ত দিলাম, আমি কখনো তার সাথে দেখা করবো না এবং আমার বিষয়ে বলা যাবে না। তারা শর্তে রাজী হয়েছিলেন। আমাকে অবশ্য এক লাখ টাকা দিয়েছিলেন। গতবছর সে জাপানের কিটো ইউনির্ভাসিটিতে পোস্ট গ্রাজুয়েট করতে গেছে। তার বাবা প্রায় প্রায় তার কাছে যায়। গত মাসেও গেছে। সেখানে গিয়েই নাকি করোনায় আক্রান্ত হয়ে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে আমার বিষয়ে সব বলে। এরকম এক ভয়ানক পরিস্থিতে সে কিনা আমার জন্য পাঠিয়েছে অলিম্পিক গেমসের টিকিট। অরোরাকে নক করলাম। সে বলল, বাবা দুদিন হয় মারা গেছেন। আমারও করোনা পজিটিভ। আইসোলেসেনে আছি। ভেবেছিলাম অনেক লুকোচুরি খেললাম। এবার সবেচেয়ে বড় ক্রীড়া মঞ্চে তার অবসান হবে। সত্যি! মানুষের জীবন এক ক্রীড়া মঞ্চ। যে কিনা আমাকে অমরত্বের বর দিয়েছিলো, সে এখন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।
Promoth Roy
Sheuli 2 years ago
চঞ্চল সিংহ রায় 3 years ago
Sasanka Sekhar Mishra 3 years ago
Tamal Das 3 years ago
To comment on content, please Login!
No comments yet :(
Please, choose your language
Comments & Reviews (0)
No comments yet :(