তালিবানদের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ : কাবুলে তালিবানের প্রথম সংবাদ সম্মেলন প্রধান ঘোষণা সমূহ ।
3 years ago
0 0তালিবানদের
মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ : কাবুলে তালিবানের প্রথম সংবাদ সম্মেলনে
প্রধান ঘোষণা
গুলি কি কি ?
১৭ আগস্ট,২০২১
তালিবান আফগানিস্তান দখল করার পর পরশু ১৭ ই আগস্ট নিশীথ রাতে একটি সংবাদ সম্মেলন করে ।এবং এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে কেন না সংবাদ সম্মেলন এর মাধ্যমে তালিবান এর যে ভাবধারা- আদর্শ আছে বা আগে ভবিষ্যতে তাঁরা কি করতে পারে সেসব বিষয়ে আমাদের জানতে পারা যায় এবং একটি ধারণা গড়ে তোলা যায় ।
যদি
New York Times news টির ওপর ভিত্তি করে বলা হয় ,তা হল – Taliban Spokesman, in first
news Confrence in Kabul ,Pledes no reprisals .(17th Aug,2021)
এখানে সংবাদ সম্মেলন করা হয় ,সাংবাদিকদের সমাগম ছিল এবং যে তালিবান এর যে কথা বলা ব্যক্তি (Spokesman) অর্থাৎ মুখপাত্র ছিলেন তিনি আলাদা-আলাদা নানা সম্যসা বিষয়াদির চর্চা করছিলেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকগন দের দ্বারা উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর ও প্রদান করা হয় ।
তবে,
এখানে একটা অন্যতম তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল এই যে ,Spokesmen ছিল অর্থাৎ যে তালিবান এর তরফ থেকে জবাব দিচ্ছিলেন তার নাম হল জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ( Zabihullah Mujahid ) এবং এই জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ বিগত ২০ বছর ধরে ,তালিবান থেকে যা কিছু বলা হত তথ্য প্রদান করা হত
,তা হত জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এর মাধ্যমে । কিন্তু প্রথম বার মঙ্গলবারে এখানে পুরো বা গোটা বিশ্ব আছে তাঁরা এখানে সক্রিয় ও স্পষ্ট দেখে এবং যা প্রস্নাদি – জিজ্ঞেসাবাদ ছিল তা এখানে সম্পন্ন হয় ।
এবং এখানে যা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উঠে এসেছে তা হল যেরকম কার্যকাল\ কার্যকর্ম বিগত তালিবান এর সময়ে ছিল ১৯৯৬-২০০১ এই পাঁচ বছরের যা করা হয়েছিল।, তেমন পুনরাবৃত্তি এখানে হবে না ।
প্রথমত উল্লেখ্য বিষয় হল এই যে, প্রতিশোধ নেওয়া হবে কি না ? কেন না আমরা জানি যখন যুক্তরাস্ট্রের (U.S.) সৈন্যরা আফগানিস্তান এ ছিল তো U.S. এর সঙ্গে আফগান যেসকল বেসামরিক আছে ,জনসাধারণ আছে ,তাঁরা U.S. এর সঙ্গে সহযোগ করেছিল-মিলে কাজ করছিল । , তো এখন তাঁদের কি করা হবে ? এখন কি তাঁদের ওপর প্রতিশোধ জ্ঞাপন করা হবে ,প্রতিশোধ নেওয়া হবে ? তাঁদের কে কি মারা হবে ,যেমন পরিস্থিতি আমরা ১৯৯৬-২০০১ সালের মধ্যবর্তী সময়ে দেখেছি । এক্ষেত্রে তালিবানের কথা হল সেখানে বর্তমান যত সৈন্যরা আছে যারা কাজ করেছে আফগানিস্তান সরকারের সঙ্গে ও যত সরকারি অফিসার \ কর্মচারীরা আছে । তাঁদের কোনও প্রকার ঝুঁকি নেই ,প্রাণহানি বা কোনও প্রকার এর ভয় নেই এরূপ তালিবানের দ্বারা বক্তব্য উত্থিত হয়েছে ,তবে তালিবান বর্তমানে এরূপ মতপ্রকাশ করেছে শুধু মাত্র ,বাস্তবে বা ভবিষ্যতে কী হবে তা অস্পষ্ট ।
এছাড়া ,রিপোর্ট অনুযায়ী
৩ লক্ষের কাছাকাছি আফগান সিভিলিয়ান এখানে যুক্তরাস্ট্রের সঙ্গে কাজ করছিল । যার মধ্যে ‘ অনুবাদক ‘ রূপেও যুক্তরাস্ট্র তাঁদের ব্যবহার করেছে । এখানে কথা হল ,এই যে ৩ লক্ষ মানুষ যুক্তরাস্ট্র এর হয়ে কাজগুলো করছে, তো এটা স্বাভাবিক বিষয় যে যুক্তরাস্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে তাঁদের সুরক্ষা প্রদান করার । তবে এখানে দেখা যাচ্ছে যে খুবই কম সংখ্যক কে যারা Refuge Protection এ আছে বা দেওয়া হয়েছে ।অর্থাৎ সকলে যেতে পারবে না যুক্তরাস্ট্র আনুমানিক
২০০০ হাজার এর কাছাকাছি যারা তাঁদের পরিবার আছে তাঁদের কে যুক্তরাস্ট্রে নিয়ে যাওয়া হবে বাকি আফগানিস্তানেই থাকবে কিন্তু যারা থাকবে তাঁদের হবে টা কি ? এই প্রসংগে তালিবান প্রদত্ত বলা হয়েছে যে তার সবাইকে মাফ করছে কারও থেকে তাঁরা কোনও প্রকার প্রতিশোধ নেবে না ,এরূপ বর্তমান পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে ।
দ্বিতীয়ত, বিষয়টি হল প্রথমে তালিবান অর্থাৎ বিগত সময়ে ১৯৯৬-২০০১ সাল এর মধ্যবর্তী কালীন এবং বর্তমান এ তালিবান এর মধ্যে পার্থক্যটি কি ? এই প্রসঙ্গে বলা হইয়েছে ,যতদূর ভাবাদর্শগত-আদর্শগত দিক ও বিস্বাস এর কথা আছে সেদিক থেকে বিচার করলে
১৯৯৬-২০০১ সালের তালিবান ,অর্থাৎ সেকাল-একাল এর মধ্যে কোনও প্রকার পার্থক্য নেই ।এটি স্পষ্টত বলা হয় । তবে অভিজ্ঞতা ,পরিপক্কতার ও অন্তরদৃষ্টির দিক থেকে অবশ্যই পার্থক্য হবে ,যা হওয়া স্বাভাবিক । তবে এ কথা আমাদের ভাবতেই হবে যে তালিবান এর আদর্শ ও বিস্বাসতার অর্থাৎ যা মূল বা শিকড় আছে তার কোনোরূপ পরিবর্তন এখানে করা হবে না ।
এক্ষেত্রে তালিবানের আদর্শ কি বা কেমন সেদিকে দিকনির্দেশ করা প্রয়োজন ,প্রথমে যেকোনো প্রতিষ্ঠান এর আদর্শকে বুজতে হলে তার কার্যকাল বা তার দ্বারা সাধিত কার্যসমূহ কিরূপ ছিল তাঁর ওপর ভিত্তি করে অনুমান লাগানো যায় ,বিগত পাঁচ বছরের যে সময়কাল ছিল ১৯৯৬-২০০১ সাল, এই সময় তালিবান চেয়েছিল ‘ Strict Version
of Sharia Law ‘. এই যে ইসলাম Law টি আছে তা এখানে বাস্তবায়ন করবে । এবং তখন দেখা দিয়েছিল যে মহিলারা আছে তাঁদের কোনও প্রকার স্বাধীনতা ছিল না ,যেমন পড়া শুনো করা ,কাজ করা, কার্যত যদি ঘর থেকে বাইরে বেরোতে হয় ,সেক্ষেত্রে পুরুষ অভিভাবক এর সঙ্গে বের হতে হবে , এবং বোরখা সম্পূর্ণ ভাবে জারি করার কথা হয়েছিল ; ও সাথে সাথে পাশ্চাত্য বই ও বিবিধ জিনিস এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছিল । তাঁদের যে ভাবাদর্শ আছে তার এরূপ বর্ণনা আছে ,যে দেওবন্দি মৌলবাদ এবং জঙ্গি ইসলামবাদে ভিত্তি করে শরিয়া ইসলামি আইনের একটি উধবাবনি রূপের সংমিস্রন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে (Innovative form
of Sharia Islamic Law based on Deobandi fundamentalism and militant islamism,) পশতুনওয়ালি নামে পরিচিত পশতুন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক রীতির সাথে মিলিত ,কারণ অধিকাংশ তালেবান পশতুন উপজাতি । এই যে তালিবান এর আদর্শ – এদিক থেকে আগে যেমন ছিল এখনো ঠিক তেমনি আছে ।,
তবে, মহিলাধিকার প্রশ্ন: প্রসঙ্গে তালিবান কর্তৃক জানানো হয় , ১৯৯৬-২০০১ এর মধ্যবর্তী সময়ে মহিলাদের ওপর অনেক অত্যাচার হয়ছে কিন্তু এখানে বর্তমানে সেইরুপ হবে না ।তাঁরা বলছে যে ‘ Women would be allowed to work and study and “ will be very active in
society but within the framework of Islam . মহিলাদের স্বাধীনতা থাকবে ,তাঁরা কাজ করতে চাইলে কাজ করবে, পড়াশুনো করার থাকলে করতে পারে ,কিন্তু তা করতে হবে ইসলামিক কাঠামো এর মধ্যে থেকে । কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় ইসলামে বিশেষ কিছু স্বাধীনতা মহিলাদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য থাকলেও তাতে তালিবানের হস্থক্ষেপ থাকে বা থাকতে পারে । তবে আগে দেখতে হবে কিরূপ পরিস্থিতি পরিলক্ষিত হয় ।
তৃতীয়ত হল, তালিবান বাকি দেশ গুলির সঙ্গে কিরূপ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়বে ! তালিবান জানিয়েছেন আগের মতো জিনিসগুলোকে পুনরাবৃত্তি করবে না । আফগানিস্তান কে জঙ্গি ঘাঁটি হিসাবে দায়ী করা হত কিন্তু এখন তালিবানরা কোনও দ্বন্দ্ব ,যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি করতে চাই না এবং তাঁরা সংঘাতের কারণ গুলোকে দূর করতে চাই । এবং তালিবানরা আফগানিস্তান কে অন্য দেশে আক্রমণের ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে দেবে না , যেমন টা ৯.১১ এর আগে বছর গুলিতে ছিল ,ওসামা-বিন-লাদেন এর বিষয়টি ।
সর্বশেষ কথাটি হল ,সেখানে কি সংবাদ মাধ্যমের অনুমতি থাকবে ? এক্ষেত্রেও তালিবান তার ইতিবাচক দিক নির্দেশ করে বলে ,তাঁরা সংবাদ পত্রের স্বাধীনতাকে সম্মান করবে কারণ এটি হল সমাজ এর জন্য উপকারী এবং নেতারা কোনও ভুল ত্রুটি করলে তা তুলে ধরা ও সংশোধন এ সক্ষম এটি রাষ্ট্রীয় বা ব্যক্তিগত মালিকাধিন গনমাধ্যমের জন্য কর্মরত সাংবাদিকরা অপরাধী নন । এছাড়া এখন পর্যন্ত যে ,বোমাবাজি হয়েছে, অসামরিক,সাধারণের যে প্রাণহানি হয়েছে, এই যে ঘটে যাওয়া ঘটনাটির জন্য আফগান জনসাধারণ কি তালিবান কে ক্ষমা করে দেবে ,! এই মর্মে তালিবান জানাই তখন যুদ্ধের সময় ছিল ও মানুষের মৃত্যু দুর্ভাগ্যজনক হয়েছিল ; কিন্তু এখন এদিকে বিশেষ সংশোধন হবে , এইরূপ একটি বর্ণনা যা তালিবান কর্তৃক দেখানো হয়েছে । তবে আমাদের অপেক্ষা করা এবং দেখা উচিত ,ভবিষ্যতে কি হয় ।
Comments & Reviews (0)
No comments yet :(